ইন্টার্ভিউ
ইন্টার্ভিউ
"জীবনের প্রথম চাকরির জন্য ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছি। সকলের কাছে দোয়াপ্রার্থী।" স্ট্যাটাসটি লিখে পোস্ট করে বিসমিল্লাহ বলে ইন্টারভিউ রুমে ঢুকল মতিন। ঠিক তখনই মনে পড়ল, ইন্টারভিউয়ের কথা জরিনার কাছে গোপন করেছে সে। আগামী সপ্তাহেই জরিনার জন্মদিন।
এই পোস্ট দেখলে হয়তো আবদার করে বসবে, "বাবু এবার আমার আঠারোতম জন্মদিনে একাশি ডজন চুড়ি কিনে দাও না!" নাহ! পোস্টটা ডিলিট করতে হবে।
কিন্তু এখন ভাইবা রুমে ঢুকে পড়েছে, মোবাইল বের করা ঠিক হবে না।
সামনে টেবিলের ওপ্রান্তে তিন চেয়ারে বসে আছেন তিনজন প্রশ্নকর্তা।
তাদের চেহারা দেখেই রীতিমতো ঘামতে লাগল মতিন।
বাসা থেকে যা পড়ে এসেছে সব গুলে খেয়ে ফেলেছে। তারউপর মাথায় ঘুরছে "৮১ ডজন চুড়ি!"
১ম প্রশ্নকর্তা গলা খাঁকারি দিয়ে বললেন, "আপনার নাম?"
মতিন স্বাভাবিক স্বরে বলল, "ফাইজুল ইসলাম মতিন।"
"আচ্ছা, আপনি বলুন তো বাংলাদেশের রাজধানীর নাম কী?"
আরেহ! এতো পানির মতো প্রশ্ন! মতিন বলে দিল, "ঢাকা।"
প্রথম প্রশ্নকর্তা মাথা ঝাঁকালেন।
২য় প্রশ্নকর্তার প্রশ্ন, "ঢাকা যদি বাংলাদেশের রাজধানী হয়, এবং সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব যদি ১৫ কোটি কিলোমিটার হয় তবে পুত্রের বয়স কতো?"
মতিন মাথার উপরে তাকালো। প্রশ্নটা মাথার উপর প্লেনের মতো উড়ে চলে গেছে।
ফ্যানটা ফুলস্পিডে ঘুরছে, মতিনের মাথাও ঘুরছে। তার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে, "একাশি ডজন চুড়ি।" মতিন মিনমিনে গলায় বলল, "স্যার, ৮১।"
দুই প্রশ্নকর্তা মুখ চাওয়াচাওয়ি করলেন।
৩য় প্রশ্নকর্তা চোখ বড় বড় করে তাকালেন। বললেন, "আচ্ছা বলুন তো, দুধ থেকে দই তৈরির ফর্মুলা কী?"
মতিন বুঝতে পারছে না সে কী গার্হস্থ্য অর্থনীতি পরীক্ষা দিচ্ছে!
কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগের ইন্টারভিউয়ে এসব প্রশ্ন কেন!
সে বলল, "স্যার, এক গ্লাস দুধের মধ্যে লেবু কচলে দিলেই দই হয়ে যাবে।"
দুই প্রশ্নকর্তা মুখ চাওয়াচাওয়ি করলেন। ৩য় প্রশ্নকর্তা চোখ বড় করে তাকালেন।
মতিন বুঝতে পারছে না, এই লোক কথায় কথায় চোখ বড় করে কেন? নাকি লোকটার চোখই বড়!
১ম প্রশ্নকর্তা প্রশ্ন করলেন, "আচ্ছা, I eat rice এর ভয়েস চেঞ্জ করুন।" মতিন ভেবে বলল, "স্যার কোন ভয়েসে চেঞ্জ করবো। পুরুষের ভয়েস নাকি মেয়ের ভয়েস?"
এবার তিনজনেই মুখ চাওয়াচাওয়ি করলেন। মতিন ভাবছে, "কোন ভুল করলাম নাকি!"
-"আচ্ছা এবার আপনাকে কিছু ব্যক্তিগত প্রশ্ন করতে চাই। আপনার বাসা কোথায়?"
-"মতিঝিল থানার সামনে।"
-"মতিঝিল থানা কোথায়?"
-"আমার বাসার সামনে।"
-"ওই দু'টো কোথায়?"
-"সামনাসামনি।"
-"আচ্ছা, আপনি আসুন।"
-"স্যার, আমার চাকরিটা কি হয়েছে?"
-"সেটা পরে আপনাকে জানানো হবে।"
তাদের সালাম দিয়ে মন খারাপ করে মতিন রুম থেকে বেরিয়ে এলো। কি ইন্টারভিউ দিলো কে জানে! গতবার ইংলিশ পরীক্ষায় তার এমন হয়েছিল। কোন গ্রামারই কমন পড়ে নাই!
বাসায় পৌঁছাতেই তার আব্বা ডাক দিল। তাঁর এই এক অভ্যাস। মতিন স্কুল থেকে পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি আসলেই কাছে নিয়ে ডেকে জিজ্ঞেস করতেন, "কেমন দিলি পরীক্ষা?" মতিন নিরসমুখে বলতো, "আব্বা, দিছি তো ভালোই। স্যারেরা নাম্বার দিলেই হয়।" আজও আব্বা ডেকে নিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলেন, "কিরে ইন্টার্ভিউ কেমন দিলি?" মতিনের মুখস্ত জবাব, "আব্বা, দিছি তো ভালোই। স্যারেরা নাম্বার দিলেই হয়।"
এদিকে ঘরে ঢুকেই সে ফেসবুকে লগ ইন করলো, পোস্ট টা ডিলিট করবে। কিন্তু সর্বনাশ যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। জরিনা কমেন্ট করেছে, "বাবু আমার ১৯ তম জন্মদিনে ৯১ ডজন চুড়ি উপহার দিতেই হবে!"
-"আচ্ছা এবার আপনাকে কিছু ব্যক্তিগত প্রশ্ন করতে চাই। আপনার বাসা কোথায়?"
-"মতিঝিল থানার সামনে।"
-"মতিঝিল থানা কোথায়?"
-"আমার বাসার সামনে।"
-"ওই দু'টো কোথায়?"
-"সামনাসামনি।"
-"আচ্ছা, আপনি আসুন।"
-"স্যার, আমার চাকরিটা কি হয়েছে?"
-"সেটা পরে আপনাকে জানানো হবে।"
তাদের সালাম দিয়ে মন খারাপ করে মতিন রুম থেকে বেরিয়ে এলো। কি ইন্টারভিউ দিলো কে জানে! গতবার ইংলিশ পরীক্ষায় তার এমন হয়েছিল। কোন গ্রামারই কমন পড়ে নাই!
বাসায় পৌঁছাতেই তার আব্বা ডাক দিল। তাঁর এই এক অভ্যাস। মতিন স্কুল থেকে পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি আসলেই কাছে নিয়ে ডেকে জিজ্ঞেস করতেন, "কেমন দিলি পরীক্ষা?" মতিন নিরসমুখে বলতো, "আব্বা, দিছি তো ভালোই। স্যারেরা নাম্বার দিলেই হয়।" আজও আব্বা ডেকে নিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলেন, "কিরে ইন্টার্ভিউ কেমন দিলি?" মতিনের মুখস্ত জবাব, "আব্বা, দিছি তো ভালোই। স্যারেরা নাম্বার দিলেই হয়।"
এদিকে ঘরে ঢুকেই সে ফেসবুকে লগ ইন করলো, পোস্ট টা ডিলিট করবে। কিন্তু সর্বনাশ যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। জরিনা কমেন্ট করেছে, "বাবু আমার ১৯ তম জন্মদিনে ৯১ ডজন চুড়ি উপহার দিতেই হবে!"
No comments